দাবি আদায়ে কঠোরতম কর্মসূচি: আমরণ অনশনে এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা!
মেটা ডেসক্রিপশন: সরকারের ৫% বাড়ি ভাড়া বৃদ্ধির প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে এবার ‘আমরণ অনশন’ শুরু করেছেন এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা। জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে তিন দফা দাবিতে এই কর্মসূচি চলছে।
এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের আন্দোলন এবার আরও কঠোর এবং निर्णायक মোড় নিলো। সরকারের পক্ষ থেকে দেওয়া ৫ শতাংশ বাড়ি ভাড়া বৃদ্ধির প্রস্তাবকে ‘প্রহসনমূলক’ আখ্যা দিয়ে প্রত্যাখ্যান করার পর, এবার “আমরণ অনশন”-এর মতো কঠোর কর্মসূচি শুরু করেছেন তারা।
আজ সোমবার (২০ অক্টোবর) সকাল থেকেই ঢাকার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারী ঐক্যজোটের ব্যানারে এই আমরণ অনশন কর্মসূচি শুরু হয়। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা শিক্ষকরা এই কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছেন। তাদের একটাই কথা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা ঘরে ফিরবেন না।
কেন এই আমরণ অনশন?
আন্দোলনের এই পর্যায়ে আসার মূল কারণ হলো, সরকারের সাম্প্রতিক একটি সিদ্ধান্ত। যখন শিক্ষকরা পূর্ণাঙ্গ জাতীয়করণের এক দফা দাবিতে আন্দোলন করছিলেন, ঠিক তখনই সরকার তাদের জন্য ৫% বাড়ি ভাড়া বৃদ্ধির একটি প্রস্তাব অনুমোদন দেয়।
শিক্ষক নেতারা এই প্রস্তাবকে সরাসরি প্রত্যাখ্যান করে বলেছেন, এটি তাদের মূল দাবি থেকে মনোযোগ সরানোর একটি কৌশল মাত্র। তারা সামান্য ভাতা বৃদ্ধি চান না, তারা চান পূর্ণাঙ্গ বৈষম্য নিরসন। সেই লক্ষ্যেই এবার ৩টি সুনির্দিষ্ট দাবিতে এই আমরণ অনশন শুরু হলো।
শিক্ষকদের সুনির্দিষ্ট তিন দফা দাবি কী কী?
আন্দোলনরত শিক্ষকরা মূলত তিনটি প্রধান দাবিকে সামনে এনেছেন, যা তাদের দীর্ঘদিনের বঞ্চনার প্রতিফলন:
১. পূর্ণাঙ্গ জাতীয়করণ:
এটিই তাদের প্রধান দাবি। তারা চান দেশের সকল এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে একযোগে জাতীয়করণ করে সরকারি শিক্ষকদের সমান মর্যাদা ও সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা হোক।
২. শতভাগ (১০০%) বাড়ি ভাড়া:
বর্তমানে এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা বাড়ি ভাড়া বাবদ মাসিক মাত্র ১,০০০ টাকা পান। তাদের দাবি, এই নগণ্য ভাতার পরিবর্তে সরকারি চাকরিজীবীদের মতো মূল বেতনের সাথে সামঞ্জস্য রেখে পূর্ণাঙ্গ বাড়ি ভাড়া প্রদান করতে হবে।
৩. শতভাগ (১০০%) উৎসব ভাতা:
এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা বর্তমানে তাদের মূল বেতনের মাত্র ২৫% উৎসব ভাতা (ঈদ/পূজা বোনাস) পান। তাদের দাবি, এই বৈষম্য দূর করে সরকারি শিক্ষকদের মতো ১০০% উৎসব ভাতা নিশ্চিত করতে হবে।
প্রেসক্লাবের বর্তমান চিত্র
জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনের চিত্র বেশ উত্তপ্ত। শত শত শিক্ষক-কর্মচারী সকাল থেকে रस्तায় অবস্থান নিয়ে তাদের দাবিদাওয়া সম্বলিত প্ল্যাকার্ড ও ব্যানার নিয়ে স্লোগান দিচ্ছেন। নেতারা ঘোষণা দিয়েছেন, এবার দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা এক ফোঁটা পানিও মুখে তুলবেন না। তারা বলছেন, “প্রয়োজনে রাজপথেই আমাদের মৃত্যু হবে, তবুও আমরা আমাদের ন্যায্য অধিকার থেকে পিছু হটবো না।”
শেষ কথা
‘মানুষ গড়ার কারিগর’দের এই আমরণ অনশন দেশের শিক্ষাব্যবস্থার জন্য একটি অশনি সংকেত। সরকার যখন শিক্ষাখাতে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখছে, তখন শিক্ষকদের রাজপথে অনশন করাটা কোনোভাবেই কাম্য নয়। এখন দেখার বিষয়, এই অচলাবস্থা নিরসনে এবং শিক্ষকদের যৌক্তিক দাবি পূরণে সরকার কতটা দ্রুত এবং কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করে।