ব্রেকিং: স্কুল-কলেজের ম্যানেজিং কমিটি সংক্রান্ত শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিপত্র স্থগিত করলো হাইকোর্ট
দেশের বেসরকারি নিম্নমাধ্যমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর ম্যানেজিং কমিটি (SMC) ও গভর্নিং বডি (GB) গঠন নিয়ে সম্প্রতি শিক্ষা মন্ত্রণালয় যে পরিপত্র জারি করেছিল, তার কার্যক্রম স্থগিত করেছে হাইকোর্ট।
একটি রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি শেষে আজ (মঙ্গলবার) বিচারপতি কাজী জিনাত হক ও বিচারপতি আইনুন নাহার সিদ্দিকার সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই স্থগিতাদেশ দেন। এই আদেশের ফলে ম্যানেজিং কমিটি গঠন ও বিলুপ্তি সংক্রান্ত মন্ত্রণালয়ের ওই বিতর্কিত পরিপত্রটি আপাতত কার্যকর থাকছে না।
কী ছিল মন্ত্রণালয়ের সেই বিতর্কিত পরিপত্রে?
গত ৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ তারিখে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বিভাগ একটি পরিপত্র জারি করে। এই পরিপত্রটি মূলত “বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডি ও ম্যানেজিং কমিটি প্রবিধানমালা-২০২৪”-এর দুটি ধারাকে কেন্দ্র করে জারি করা হয়েছিল।
ধারা দুটি হলো: ১. বিধি ১৩(১): ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির মনোনয়ন সংক্রান্ত। ২. বিধি ৬৪(৩): সভাপতির শিক্ষাগত যোগ্যতা ও বয়স সংক্রান্ত।
এর আগে, গত ২৮ ও ৩১ আগস্ট ঢাকা শিক্ষাবোর্ডসহ অন্যান্য বোর্ডগুলো এই বিধিমালায় কিছু সংশোধনী আনে, যা নিয়ে বিভিন্ন মহলে, বিশেষ করে প্রতিষ্ঠান প্রধান ও সম্ভাব্য সভাপতি প্রার্থীদের মধ্যে তীব্র অসন্তোষ দেখা দেয়।
কেন এই রিট আবেদন? (অভিযোগ)
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এই পরিপত্র এবং শিক্ষাবোর্ডের আনা সংশোধনীগুলোর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট আবেদন দায়ের করা হয়। রিটটি দায়ের করেন এমরান হোসেনসহ চারটি বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অ্যাডহক কমিটির সভাপতিগণ।
রিটকারীদের পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. হুমায়ন কবির জানান, প্রবিধানমালায় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির যোগ্যতা হিসেবে বয়স ও শিক্ষাগত যোগ্যতা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছিল, যা মূল আইনের সাথে সাংঘর্ষিক বলে তারা মনে করেন। মূলত এই অসংগতির কারণেই তারা আদালতের শরণাপন্ন হন।
হাইকোর্টের আদেশ ও রুল
আদালত রিটকারীদের আবেদন আমলে নিয়ে প্রাথমিক শুনানি শেষে মন্ত্রণালয়ের জারি করা সেই পরিপত্রটির কার্যক্রম স্থগিত করার আদেশ দেন।
একইসাথে, আদালত একটি রুলও জারি করেছেন। রুলে জানতে চাওয়া হয়েছে—প্রবিধানমালার এই বিতর্কিত দুটি সংশোধিত বিধি (১৩(১) এবং ৬৪(৩)) কেন বেআইনি ও সংবিধানের সাথে সাংঘর্ষিক ঘোষণা করা হবে না। শিক্ষা সচিবসহ সংশ্লিষ্টদের এই রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
শেষ কথা
হাইকোর্টের এই স্থগিতাদেশের ফলে আপাতত ম্যানেজিং কমিটি ও গভর্নিং বডি গঠন প্রক্রিয়া পূর্বের নিয়মেই চলবে। মন্ত্রণালয়ের নতুন এই পরিপত্র এবং বোর্ডের সংশোধনীগুলো আইনিভাবে বাতিল হয়ে যায় কিনা, তা এখন রুলের চূড়ান্ত নিষ্পত্তির ওপর নির্ভর করছে। এই আদেশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা সংক্রান্ত জটিলতায় একটি নতুন মাত্রা যোগ করলো।