বাংলাদেশ

শিক্ষকদের বাড়ি ভাড়া বৃদ্ধি: সরকারের সিদ্ধান্তকে জামায়াত আমীরের ‘স্বাগত’, কিন্তু রাজপথ বলছে ভিন্ন কথা!

এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের জাতীয়করণের দাবিতে চলমান আন্দোলনের মধ্যেই সরকারের পক্ষ থেকে ৫% বাড়ি ভাড়া বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সরকারের এই পদক্ষেপ নিয়ে যখন রাজপথ উত্তপ্ত, ঠিক সেই মুহূর্তে এ বিষয়ে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান।

তিনি সরকারের এই সিদ্ধান্তকে “স্বাগত” জানিয়েছেন, তবে একই সাথে বলেছেন, এই সিদ্ধান্ত আরও আগে নেওয়া উচিত ছিল।

জামায়াত আমীরের আনুষ্ঠানিক বিবৃতি

এক বিবৃতিতে ডা. শফিকুর রহমান এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বাড়ি ভাড়া বৃদ্ধির সরকারি সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, “এই বিবেচনাটি যদি আগে করা হতো, তবে শিক্ষকমণ্ডলীর কষ্ট এবং ছাত্র-ছাত্রীদের ক্ষতি উভয়ই এড়ানো যেত।”

তার এই মন্তব্যটি মূলত সরকারের দেরিতে সাড়া দেওয়ার একটি সমালোচনা, তবে একইসাথে এটি সরকারের পদক্ষেপকে একটি ইতিবাচক স্বীকৃতিও দিচ্ছে।

কিন্তু ‘স্বাগত’ জানানোর বাস্তবতা কী?

এখানেই শিক্ষক আন্দোলনের প্রেক্ষাপটটি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। জামায়াত আমীর সরকারের যে সিদ্ধান্তকে “স্বাগত” জানিয়েছেন, সেটি হলো এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বাড়ি ভাড়া ৫ শতাংশ বৃদ্ধি করার প্রস্তাব।

বাস্তবতা হলো, রাজপথে আমরণ অনশনরত শিক্ষকরা সরকারের এই ৫% বৃদ্ধির প্রস্তাবকে প্রথম দিনেই সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেছেন।

শিক্ষক নেতারা এই প্রস্তাবকে ‘প্রহসনমূলক’ এবং ‘অগ্রহণযোগ্য’ বলে আখ্যায়িত করেছেন। তাদের বক্তব্য পরিষ্কার—তারা ১,০০০ টাকার বাড়ি ভাতার পরিবর্তে ৫% বৃদ্ধি চান না। তাদের সুস্পষ্ট দাবি তিনটি:

১. পূর্ণাঙ্গ জাতীয়করণ। ২. ১০০% বাড়ি ভাড়া। ৩. ১০০% উৎসব ভাতা।

বিশ্লেষণ: রাজনৈতিক বিবৃতি বনাম রাজপথের আন্দোলন

এই পরিস্থিতি একটি স্পষ্ট disconnect বা অসামঞ্জস্য তুলে ধরেছে।

  • রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ: জামায়াতে ইসলামীর মতো একটি রাজনৈতিক দল সরকারের এই পদক্ষেপকে ‘স্বাগত’ জানিয়ে বিষয়টিকে একটি রাজনৈতিক অগ্রগতির স্বীকৃতি দিচ্ছে।
  • শিক্ষকদের দৃষ্টিকোণ: অন্যদিকে, যারা সরাসরি এই আন্দোলনের ভুক্তভোগী, সেই শিক্ষকরা এই ৫% বৃদ্ধিকে তাদের মূল দাবি থেকে মনোযোগ সরানোর একটি ‘অপকৌশল’ হিসেবে দেখছেন। তারা এই ‘স্বাগত’ জানানোর পরিবর্তে, দাবি আদায়ে আরও কঠোর কর্মসূচি (আমরণ অনশন) বেছে নিয়েছেন।

শেষ কথা

যদিও রাজনৈতিক অঙ্গন থেকে সরকারের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানানো হচ্ছে, কিন্তু তাতে শিক্ষক আন্দোলনের তীব্রতায় কোনো প্রভাব পড়েনি। শিক্ষকরা তাদের মূল দাবি থেকে একচুলও নড়েননি। জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে তাদের আমরণ অনশন চলছে। তাই, এই সংকটের সমাধান রাজনৈতিক বিবৃতিতে নয়, বরং শিক্ষকদের যৌক্তিক দাবি পূরণের মাধ্যমেই সম্ভব হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *