ইমাম-মুয়াজ্জিনদের বেতন বৃদ্ধির দাবি: ধর্ম উপদেষ্টার সঙ্গে সারজিস বুখারীর বৈঠক
দেশের লক্ষ লক্ষ ইমাম ও মুয়াজ্জিনদের আর্থিক সুযোগ-সুবিধা ও সম্মান বৃদ্ধির দাবিতে সরকারের উচ্চ পর্যায়ে আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সম্প্রতি, বিশিষ্ট ইসলামী ব্যক্তিত্ব মাওলানা সারজিস বিন রাজ্জাকী (সারজিস বুখারী) অন্তর্বর্তী সরকারের ধর্ম বিষয়ক উপদেষ্টার সঙ্গে এক বিশেষ বৈঠকে মিলিত হন।
এই বৈঠকে তিনি দেশব্যাপী মসজিদগুলোতে কর্মরত ইমাম ও মুয়াজ্জিনদের বর্তমান আর্থিক অবস্থা তুলে ধরেন এবং তাদের জন্য একটি সম্মানজনক বেতন কাঠামো প্রণয়নের জোর দাবি জানান।
বৈঠকের মূল আলোচ্য বিষয় কী ছিল?
মাওলানা সারজিস বিন রাজ্জাকী ধর্ম উপদেষ্টার কাছে ইমাম-মুয়াজ্জিনদের জীবনযাত্রার মানোন্নয়নের জন্য কয়েকটি সুনির্দিষ্ট দাবি তুলে ধরেন। দাবিগুলো হলো:
- সম্মানজনক বেতন-ভাতা: বর্তমান উচ্চ মূল্যস্ফীতি ও দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির বাজারে ইমাম ও মুয়াজ্জিনরা অত্যন্ত স্বল্প আয়ে জীবনযাপন করছেন। তাদের সামাজিক মর্যাদা ও ন্যূনতম চাহিদা পূরণের জন্য একটি সম্মানজনক জাতীয় বেতন কাঠামো বা ভাতা প্রণয়ন করা।
- সামাজিক মর্যাদা নিশ্চিতকরণ: ইমামরা সমাজের সম্মানিত ব্যক্তি এবং নৈতিকতার শিক্ষক। তাদের এই মর্যাদার রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি এবং সেই অনুযায়ী সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা।
- সরকারি অনুদান: বিশেষ করে গ্রামীণ ও প্রত্যন্ত অঞ্চলের মসজিদগুলোতে, যেখানে মুসল্লিদের অনুদান খুবই সীমিত, সেখানে ইমাম-মুয়াজ্জিনদের ভাতার জন্য সরকারি কোষাগার থেকে বিশেষ অনুদানের ব্যবস্থা করা।
কেন এই দাবি এত গুরুত্বপূর্ণ?
মাওলানা সারজিস বিন রাজ্জাকী বৈঠকে উল্লেখ করেন, “ইমাম-মুয়াজ্জিনরা হলেন সমাজের বাতিঘর। তারা জুমার খুতবা থেকে শুরু করে দৈনন্দিন প্রার্থনায় সমাজের মানুষকে নৈতিক ও মানবিক শিক্ষা দেন। সমাজে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে তাদের ভূমিকা অপরিসীম।”
তিনি আরও বলেন, কিন্তু এই গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেও তাদের অনেকেই আর্থিক সংকটে জর্জরিত, যা তাদের পক্ষে সম্মানজনকভাবে জীবনধারণ করা কঠিন করে তোলে। একটি সমৃদ্ধ ও নৈতিক সমাজ বিনির্মাণে ইমামদের আর্থিক সচ্ছলতা অত্যন্ত জরুরি।
ধর্ম উপদেষ্টার আশ্বাস
বৈঠকে অন্তর্বর্তী সরকারের ধর্ম বিষয়ক উপদেষ্টা মাওলানা সারজিস বিন রাজ্জাকীর এই দাবিগুলো অত্যন্ত মনোযোগ সহকারে শোনেন। তিনি ইমাম ও মুয়াজ্জিনদের সামাজিক গুরুত্বের কথা স্বীকার করেন।
সূত্রে জানা গেছে, উপদেষ্টা মহোদয় এই যৌক্তিক দাবিগুলো পর্যালোচনা করে দেখবেন এবং সরকারের উচ্চ পর্যায়ে এ বিষয়ে আলোচনা করার আশ্বাস দিয়েছেন।
শেষ কথা
সারাদেশের আলেম সমাজ এবং সাধারণ মুসল্লিরা এখন এই আলোচনার বাস্তব রূপায়নের দিকে তাকিয়ে আছেন। ইমাম ও মুয়াজ্জিনদের মতো সমাজের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা গেলে, তা দেশের সামগ্রিক ধর্মীয় ও সামাজিক পরিবেশে একটি ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে আশা করা হচ্ছে।