শিক্ষকদের বাড়ি ভাড়া ১৫% বৃদ্ধিতে অর্থ মন্ত্রণালয়ের চূড়ান্ত সম্মতি! (ধাপে ধাপে কার্যকর)
এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের জাতীয়করণ ও বৈষম্য নিরসনের দাবিতে চলমান আমরণ অনশনের মধ্যেই সরকারের পক্ষ থেকে একটি বিশাল পদক্ষেপ নেওয়া হলো। অর্থ মন্ত্রণালয় অবশেষে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কর্মরত এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বাড়ি ভাড়া ভাতা ১৫ শতাংশ বৃদ্ধিতে চূড়ান্ত সম্মতি দিয়েছে।
মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক চিঠিতে এই সম্মতির কথা জানা যায়। এটি শিক্ষকদের দীর্ঘদিনের আন্দোলনের মুখে সরকারের পক্ষ থেকে আসা সবচেয়ে সুনির্দিষ্ট ও বড় আর্থিক প্রস্তাব।
কীভাবে এবং কবে থেকে কার্যকর হবে এই ১৫% বৃদ্ধি?
অর্থ মন্ত্রণালয়ের চিঠি অনুযায়ী, এই ১৫ শতাংশ বাড়ি ভাড়া একবারে কার্যকর হচ্ছে না। এটি দুটি ধাপে বাস্তবায়ন করা হবে:
- প্রথম ধাপ: চলতি মাস (নভেম্বর ২০২৫) থেকেই শিক্ষক-কর্মচারীরা মূল বেতনের ৭.৫ শতাংশ হারে বাড়ি ভাড়া পাবেন। তবে এর একটি সর্বনিম্ন সীমাও বেঁধে দেওয়া হয়েছে। কোনো ক্ষেত্রেই এই ভাতার পরিমাণ ২,০০০ টাকার কম হবে না।
- দ্বিতীয় ধাপ: আগামী বছর (২০২৬ সাল)-এর জুলাই মাস থেকে বাড়ি ভাড়া আরও ৭.৫ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে।
অর্থাৎ, ২০২৬ সালের জুলাই মাস থেকে শিক্ষকরা সর্বমোট ১৫ শতাংশ বাড়ি ভাড়া পেতে শুরু করবেন।
শিক্ষা উপদেষ্টার প্রতিক্রিয়া
এই সিদ্ধান্তকে একটি বড় অর্জন হিসেবে দেখছেন শিক্ষা উপদেষ্টা। তিনি জানিয়েছেন, শিক্ষকদের দাবি অনুযায়ী (নির্দিষ্ট ১,০০০ টাকার পরিবর্তে) শতাংশের হারে এই ভাতা নিশ্চিত করতে পেরে একজন শিক্ষক হিসেবে তিনি নিজেকে “সৌভাগ্যবান” মনে করছেন। মন্ত্রণালয় মনে করে, এটি কোনো একক পক্ষের জয় নয়, বরং এটি একটি সম্মিলিত প্রচেষ্টা।
শিক্ষকরা কি এইবার আন্দোলন থামাবেন? (বিশ্লেষণ)
এটিই এখন সবচেয়ে বড় প্রশ্ন। কারণ, রাজপথে আমরণ অনশনরত শিক্ষকরা ৩টি সুনির্দিষ্ট দাবিতে আন্দোলন করছেন:
১. পূর্ণাঙ্গ জাতীয়করণ। ২. ১০০% বাড়ি ভাড়া (অথবা ন্যূনতম ২০% দাবি ছিল)। ৩. ১০০% উৎসব ভাতা।
এই প্রেক্ষাপটে সরকারের ১৫% (তা-ও দুই ধাপে) ভাতা বৃদ্ধির এই প্রস্তাবকে শিক্ষকরা কীভাবে নেবেন, তা এখনো স্পষ্ট নয়।
- ইতিবাচক দিক: সরকার নির্দিষ্ট ১,০০০ টাকার প্রথা ভেঙে ‘শতাংশ’ হারে ভাতা দিতে সম্মত হয়েছে, যা একটি বড় নীতিগত পরিবর্তন।
- নেতিবাচক দিক: শিক্ষকদের মূল দাবি ১০০% বা ২০% এর তুলনায় ১৫% অনেক কম। তদুপরি, এটি দুই ধাপে বাস্তবায়ন করা হবে, যা তাৎক্ষণিক চাহিদা পূরণ করবে না।
শিক্ষক নেতারা এই প্রস্তাব পাওয়ার পর তাদের আমরণ অনশনের বিষয়ে কী সিদ্ধান্ত নেন, কিংবা এই প্রস্তাবকে তারা ‘প্রত্যাখ্যান’ করে আন্দোলন চালিয়ে যান কিনা, সেদিকেই এখন তাকিয়ে আছে সারা দেশের শিক্ষা অঙ্গন।