বাংলাদেশ

শিক্ষার্থী শ্রীশান্ত কারাগারে, কিন্তু মেসেঞ্জার চ্যাটে সক্রিয়! বুয়েটের সেই স্ক্রিনশট তদন্তে ডিবি

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) নিয়ে আবারও এক নতুন রহস্য ও উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। একটি চাঞ্চল্যকর মামলায় কারাবন্দী বুয়েটের শিক্ষার্থী শ্রীশান্ত কর্মকার-এর নামে ফেসবুক মেসেঞ্জার গ্রুপের চ্যাটের স্ক্রিনশট ছড়িয়ে পড়েছে, যা নিয়ে তোলপাড় চলছে।

সবচেয়ে বড় প্রশ্নটি হলো একজন ব্যক্তি কারাগারে বন্দী থাকা অবস্থায় কীভাবে একটিভভাবে মেসেঞ্জার গ্রুপে চ্যাট করতে পারেন? এই রহস্যময় স্ক্রিনশটের সত্যতা যাচাইয়ে মাঠে নেমেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

ঘটনার সূত্রপাত: কী আছে সেই স্ক্রিনশটে?

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বুয়েটের শিক্ষার্থীদের একটি মেসেঞ্জার গ্রুপের চ্যাটের কিছু স্ক্রিনশট ছড়িয়ে পড়ে। সেই স্ক্রিনশটগুলোতে দেখা যায়, গ্রুপের সদস্যদের মধ্যে শ্রীশান্ত কর্মকারের নামে একটি অ্যাকাউন্টও রয়েছে এবং সেখান থেকে বার্তা আদান-প্রদান হচ্ছে।

যেহেতু শ্রীশান্ত কর্মকার বর্তমানে একটি মামলায় কারাগারে আটক রয়েছেন, তাই এই স্ক্রিনশটগুলো প্রকাশের পর থেকেই তীব্র বিতর্ক শুরু হয়। এটি কি আসলেই শ্রীশান্তের অ্যাকাউন্ট? নাকি তার নামে অন্য কেউ অ্যাকাউন্টটি চালাচ্ছে? অথবা, কারাগারের ভেতর থেকেই তিনি এই যোগাযোগের চেষ্টা করছেন?

তদন্তে ডিবি: যা বললেন হারুন অর রশীদ

এই গুরুতর বিষয়টি নজরে আসার পর দ্রুত তদন্ত শুরু করেছে ডিবি পুলিশ। এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের প্রধান, হারুন অর রশীদ, গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, তারা এই স্ক্রিনশটগুলো দেখেছেন এবং বিষয়টিকে সর্বোচ্চ গুরুত্বের সাথে নিয়েছেন।

তিনি বলেন, “আমরা স্ক্রিনশটগুলো যাচাই-বাছাই করে দেখছি। কারাগারে থাকা একজন আসামির পক্ষে মেসেঞ্জার গ্রুপ চালানো সম্ভব কিনা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”

ডিবি প্রধান আরও স্পষ্ট করেন যে, তদন্তে কয়েকটি বিষয়কে প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে:

১. অ্যাকাউন্টটি আসলেই শ্রীশান্ত কর্মকারের কিনা। ২. তার নামে অন্য কোনো ব্যক্তি দেশ বা বিদেশ থেকে এই ভুয়া অ্যাকাউন্টটি চালাচ্ছে কিনা। ৩. নাকি কারাগারের ভেতর থেকে কোনোভাবে এই যোগাযোগের ঘটনা ঘটছে।

গুরুত্ব ও পরবর্তী পদক্ষেপ

বুয়েটের মতো একটি স্পর্শকাতর প্রতিষ্ঠানের কারাবন্দী শিক্ষার্থীর নামে এ ধরনের অনলাইন কার্যক্রম জনমনে যেমন বিভ্রান্তি তৈরি করছে, তেমনি এটি একটি বড় ধরনের নিরাপত্তা ঝুঁকিও বটে।

ডিবি প্রধান জানিয়েছেন, তারা এই বিষয়ে পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত করছেন। তদন্তে কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য বা প্রমাণ পাওয়া গেলে, তা যথাযথ প্রক্রিয়ায় বিজ্ঞ আদালতকে জানানো হবে।

শেষ কথা

কারাগারে থাকা শ্রীশান্তের নামে এই মেসেঞ্জার চ্যাটের রহস্য উন্মোচন এখন সময়ের ব্যাপার। ডিবির তদন্তেই বেরিয়ে আসবে এই স্ক্রিনশটের পেছনের আসল সত্য—এটি কি কোনো ডিজিটাল জালিয়াতি, নাকি এর পেছনে অন্য কোনো গভীর রহস্য লুকিয়ে আছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *