চাকরি

শিক্ষা ভবনের ডিজি পদ কার ভাগ্যে? এক পদের জন্য লবিংয়ে ৬১ অধ্যাপক!

দেশের শিক্ষা প্রশাসনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ও কাঙ্ক্ষিত পদ মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) মহাপরিচালক (ডিজি) খুব শীঘ্রই শূন্য হতে যাচ্ছে। বর্তমান মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদের চাকরির মেয়াদ শেষ হওয়ায় এই পদের জন্য শুরু হয়েছে ব্যাপক দৌড়ঝাঁপ।

আশ্চর্যজনক হলেও সত্যি, বিসিএস (সাধারণ শিক্ষা) ক্যাডারের এই শীর্ষ পদের জন্য এবার রেকর্ড ৬১ জন অধ্যাপক মাঠে নেমেছেন। ‘শিক্ষা ভবন’ নামে পরিচিত এই অধিদপ্তরের প্রধান হওয়ার জন্য তারা সবাই শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে শুরু করে সরকারের উচ্চ পর্যায়ে জোর লবিং ও তদবির চালাচ্ছেন।

কেন এই পদটি এত গুরুত্বপূর্ণ?

মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) হলো দেশের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষা ব্যবস্থার মূল চালিকাশক্তি। এই অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) পদের গুরুত্ব অপরিসীম:

  • প্রশাসনিক প্রধান: তিনি সারা দেশের হাজার হাজার সরকারি-বেসরকারি স্কুল ও কলেজের শিক্ষক-কর্মচারীদের প্রশাসনিক প্রধান হিসেবে কাজ করেন।
  • নীতি নির্ধারণ: শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নীতি ও সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে তিনি মূল ভূমিকা পালন করেন।
  • বিশাল কর্মযজ্ঞ: এমপিওভুক্তি, শিক্ষক বদলি, পদোন্নতি, এবং শিক্ষার মানোন্নয়নসহ বিশাল এক কর্মযজ্ঞের নেতৃত্ব দেন তিনি।

এই কারণে শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তাদের কাছে এই পদটি অত্যন্ত সম্মানজনক ও ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে বিবেচিত হয়।

কীভাবে হবে নিয়োগ প্রক্রিয়া?

জানা গেছে, শিক্ষা মন্ত্রণালয় এই ৬১ জন আগ্রহী ও যোগ্য অধ্যাপকের মধ্য থেকে একটি সংক্ষিপ্ত তালিকা বা প্যানেল তৈরি করবে। এই প্যানেল থেকেই সরকার পরবর্তী মহাপরিচালককে চূড়ান্তভাবে নিয়োগ দেবে।

এই সংক্ষিপ্ত তালিকায় স্থান পেতেই মূলত প্রার্থীরা নিজ নিজ অবস্থান থেকে সর্বোচ্চ চেষ্টা ও তদবির চালিয়ে যাচ্ছেন।

কারা আছেন আলোচনার শীর্ষে?

যদিও ৬১ জন প্রফেসরের প্রত্যেকেই নিজ নিজ যোগ্যতায় এই পদের দাবিদার, তবুও শিক্ষা প্রশাসনের অন্দরে কয়েকটি নাম নিয়ে জোর আলোচনা চলছে। এদের মধ্যে রয়েছেন:

  • মাউশি’র বর্তমান কর্মকর্তারা: অধিদপ্তরের বিভিন্ন উইংয়ের পরিচালকরা (যেমন: অধ্যাপক এস এম আমিরুল ইসলাম, অধ্যাপক মো. মাসুদ আলম তালুকদার, অধ্যাপক শাহেদুল খবির চৌধুরী, অধ্যাপক মো. কামরুল ইসলাম, অধ্যাপক ওয়াহিদুজ্জামান, অধ্যাপক ইফতেখারুল আলম প্রমুখ) এই দৌড়ে স্বাভাবিকভাবেই এগিয়ে আছেন।
  • শীর্ষ কলেজের অধ্যক্ষরা: ঢাকার বাইরে ও ভেতরের বিভিন্ন শীর্ষ সরকারি কলেজের অধ্যক্ষরাও (যেমন: ঢাকা আলিয়া মাদরাসার অধ্যাপক আবু সাঈদ মো. আনিসুজ্জামান, সরকারি তিতুমীর কলেজের অধ্যাপক মোদাচ্ছের হোসেন, কুষ্টিয়া সরকারি কলেজের অধ্যাপক হারুন-অর-রশিদ প্রমুখ) এই পদের জন্য সক্রিয়ভাবে চেষ্টা করছেন।

শেষ কথা

এক পদের বিপরীতে এতজন শীর্ষ কর্মকর্তার আগ্রহ এই পদের গুরুত্বকেই আবার প্রমাণ করলো। শিক্ষা সংশ্লিষ্ট সকলেই এখন তাকিয়ে আছেন, কে হতে যাচ্ছেন ‘শিক্ষা ভবনের’ পরবর্তী অভিভাবক।

সংশ্লিষ্টরা আশা করছেন, সকল লবিং ও তদবিরের ঊর্ধ্বে উঠে সরকার এমন একজন দক্ষ, সৎ ও দূরদর্শী অধ্যাপককেই এই গুরুত্বপূর্ণ পদের জন্য নির্বাচিত করবে, যিনি দেশের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষার মানোন্নয়নে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *